আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকার বিজয় হবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিজয় হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরাই নির্বাচনে জয়লাভ করবে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে তাদের রায় দেবে।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তাঁরা যেকোন প্রকার জনরায় মেনে নিতেও প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনে আমাদের জয়ের বিষয়ে সবসময়ই আশাবাদী। আমার জনগণের ওপর বিশ্বাস রয়েছে এবং জানি তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তারা আমাদেরকেই পছন্দ করবে।’
রোববার সকালে ধানমণ্ডির সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট প্রদানের সময় এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
নির্বাচনে ফলের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তাঁর দল গণতন্ত্র এবং জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ জনগণ যে রায় দেয় আমরা তা মেনে নেব।’
দেশবাসীর কাছে নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জনগণ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য তাঁর দল আওয়ামী লীগকে পুনঃনির্বাচিত করবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে এবং আমি বিশ্বাস করি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য জনগণ নৌকায় ভোট দেবে এবং আরেক বার তাঁদের সেবা করার জন্য আমাদের সুযোগ দেবে।’
‘আমরা আশা করি যেসব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি সেগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরো উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে সক্ষম হব। আমি মনে করি নৌকা অবশ্যই জয়যুক্ত হবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তাঁর দল একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো সহিংসতা চাই না, আমরা চাই জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে, যেটা তাদের নাগরিক অধিকার। তারা তাঁদের ইচ্চেমত ভোট প্রদান করে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে।’
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি সকল ভোটার, প্রার্থী এবং দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি ধৈর্য্য ধারণের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা যদি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারি তাহলে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা উন্নয়নের গতিটা ধরে রাখতে সক্ষম হবে।’
দেশে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। কাজেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই দেশ ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ এবং আমার দৃঢ় বিশ্বাস দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর মাধ্যমে আমরা এই দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সমর্থ হব।
নির্বাচনকালীন সহিসংতায় আওয়ামী লীগের ১০ জন নেতা-কর্মী হত্যার কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এটা খুব দুঃখজনক যে, তাঁর দলের চার নেতা-কর্মীকে বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসীরা গতকালই হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, ‘নওগাঁর পত্নীতলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ আমাদের ১০ জন নেতা-কর্মীকে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা গত কয়েকদিনে হত্যা করেছে।’
দেশে বিরাজমান নির্বাচনের পরিবেশের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর দল একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশী। যেহেতু অতীতে সমারিক শাসনামলে ভোটের অধিকার আদায় করতে গিয়ে দেশের জনগণ অনেক লড়াই সংগ্রাম করেছে।
তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সবসময় শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচনের আয়োজন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেরকমই একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছি যেখানে জনগণ কোনরকম বাধা বিঘ্ন ছাড়াই তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
‘আমি আস্থাশীল যে, এবারেও নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে,’ যোগ করেন তিনি।
এবারের নির্বাচনকে ঘিরে কিছু ঘটনা এবং আওয়ামী লীগের ১০ জন নেতা-কর্মীকে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত ভাবে হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসি দল এবং তারা সবসময়ই সন্ত্রাস এবং দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকে।’
শেখ হাসিনা এসময় নির্বাচনে জয়লাভের বিষয়ে আশাবাদের অংশ হিসেবে ‘ভি সাইন’ (ভিক্টরি সাইন) প্রদর্শন করেন।
এর আগে সকাল ৮ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা সিটি কলেজ ভোট কেন্দ্রে প্রথম ভোটার হিসেবে সকাল ৮টায় তাঁর ভোট প্রদান করেন।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল তাঁর সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে সিটি কলেজ ভোটকেন্দ্রে আসেন এবং দোতলার ভোট কক্ষে গিয়ে ভোট প্রদান করেন।